Wednesday, August 22, 2018

আল্লাহর কি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রয়েছে ?


সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর, দুরুদ ও সালাম নাযীল হোক প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উপর।
অতঃপর, মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কোরআনের বিভিন্ন স্থানে তার হাত, চোখ, চেহারা, এর কথা বলেছেন, সহীহ হাদীসে আল্লাহর পা এর বর্ণনাও রয়েছে, কিন্তু এগুলো কি? এগুলো কি আল্লাহর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাকি সিফাত বা গুন?আশ’আরী ও মাতুরিদী সহ জাহমীয়া এবং আরও কিছু ফিরকার অনুসারীরা আল্লাহর হাত, পা, চেহারা, চোখ এর তা’বীল বা ব্যাখ্যা করেন, তারা আল্লাহর হাত, পা, চোখ, চেহারা এগুলোকে অস্বীকার করে এগুলোর বিভিন্ন অর্থ বের করেন, তাদের এসব ব্যাখ্যার বিরোধিতা ইমাম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ সহ সালাফগন করেছেন, তাই আমরা এগুলোর ব্যাখ্যা করবো না, কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো এগুলো কি?
সিফাত বা গুন নাকি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ।
পাঠকের জন্য অতি সহজে এবং যথাসাধ্য সম্ভব ছোট করে এই বিষয়ে আলোচনা শুরু করছি।
লক্ষণীয় বিষয় এই বিষয়টি আলোচনার ক্ষেত্রে আমি শুধু মাত্র সেই সকল ইমামগনের বানী উল্লেখ করবো যাদের সম্পর্কে আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের অনুসারীরা এবং দাবীদারেরা মতানৈক্য করেন না, অর্থাৎ ৪ মাযহাবের অনুসারীরা, আহলে হাদীস/সালাফী(মাযহাবের অনুসরন যারা করেন না), এবং যারা বিদ’আতী কেউই সেই সকল ইমামদের সম্পর্কে বিরূপ মত পোষণ করেন না বরং সকলেই তাদের সম্মান করেন এবং গ্রহন যোগ্য মনে করেন।
অর্থাৎ, আমি এখানে ইমাম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ, ইমাম শাফিয়ী রাহিমাহুল্লাহ ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল রাহিমাহুল্লাহ, ইমাম আবু জাফর আত-তাহাবী রাহিমাহুল্লাহ এর বক্তব্য পেশ করবো।
এছাড়াও আমি এখানে বাংলাদেশ এর জনপ্রিয় আলিম ডঃ মানজুরে ইলাহী হাফিযাহুল্লাহ এর বক্তব্য উল্লেখ করবো,
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তার চেহারা সম্পর্কে এরশাদ করেছেনঃ “তার(আল্লাহর) চেহারা ব্যতীত অন্য সকল কিছুই ধংসশীল” (সুরা কাসাসঃ ৮৮)
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তার হাত সম্পর্কে বলেছেনঃ “আমি যাকে স্বহস্তে সৃষ্টি করলাম, তার প্রতি সিজদায় অবনত হতে কিসে তোমাকে বাধা প্রদান করল?” (সুরা স্বাদঃ ৭৫)
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তার হাত সম্পর্কে আরও বলেছেনঃ “ইয়াহুদরা বলে বেড়ায় আল্লাহর হাত সঙ্কুচিত। তাদের হাত সঙ্কুচিত হোক এবং তাদের বক্তব্যের জন্য তারা অভিশপ্ত হোক। বরং আল্লাহর উভয় হাত সুপ্রসারিত। তিনি যেভাবে ইচ্ছা ব্যয় করে থাকেন” (সুরা মায়েদাঃ ৬৪)
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তার চক্ষু সম্পর্কে বলেছেনঃ “আপনার পালনকর্তার নির্দেশের অপেক্ষায় আপনি ধৈর্যধারন করুন। আপনিতো আমার(আল্লাহর) দৃষ্টির সম্মুখেই রয়েছেন” (সুরা আত-তুরঃ ৪৮)
তাহলে এটি স্পষ্ট হলো যে আল্লাহর হাত, চোখ, চেহারা, পা রয়েছে।

বেশীর ভাগ হানাফী মাযহাবের অনুসারীরা আশ’আরী এবং মাতুরিদী আকীদার অনুসারী হয়ে থাকে, তারা আকীদার ক্ষেত্রে ইমাম আবু হানিফার অনুসরন করেন না বললেই চলে, কিছু কিছু হানাফী আছেন যারা আকীদার ক্ষেত্রেও ইমাম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহকে অনুসরন করেন আর এরাই মূলত সঠিক পথে রয়েছেন, আর আকীদার ক্ষেত্রে হাম্বলী মাযহাবের অনুসারীরা হানাফীদের পুরোই উল্টো, হাম্বলীরা কিছু কিছু ফিকহী মাসআলাতে ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল রাহিমাহুল্লাহ এর মতের বিপরীতে গিয়ে শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবন কুদামা আল-মাকদিসী অথবা শাইখুল ইসলাম ইমাম তাকীউদ্দীন আহমাদ ইবন তায়মিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ এর অনুসরন করে থাকেন কিন্তু আকীদাহ এর ক্ষেত্রে হাম্বলীরা(প্রায় সকল হাম্বলীরা) কখনই ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল রাহিমাহুল্লাহ এর আকীদার বিরুদ্ধে যান না, যার ফলে যুগ যুগ ধরে তারা প্রশংসাও পেয়েছেন।
যাই হোক, মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার হাত, পা, চেহারা, চোখ আল্লাহর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নাকি সিফাত বা গুন বা বিশেষণ, আলোচনা করা যাক,
১.   ইমাম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ বলেছেনঃ “তিনি (আল্লাহ) ‘শাইউন’ ‘বস্তু’ বা ‘বিদ্যমান অস্তিত্ব’, তবে অন্য কোনো সৃষ্ট ‘বস্তু’ বা ‘বিদ্যমান বিষয়ের’ মত তিনি নন। তার ‘শাইউন’- ‘বস্তু’ হওয়ার অর্থ তিনি বিদ্যমান অস্তিত্ব, কোনো দেহ, কোনো জাওহার(মৌল উপাদান) এবং কোন ‘আরায’ (অমৌল উপাদান) ব্যাতিরেখেই। তার কোনো সীমা নেই, বিপরীত নেই, সমকক্ষ নেই, তুলনা নেই। “অতএব তোমরা কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ বানাবে না”। তার ইয়াদ(হাত) আছে, ওয়াজহ(মুখমণ্ডল) আছে, নফস(সত্তা) আছে, কারন আল্লাহ কোরআনে এগুলো উল্লেখ করেছেন। কোরআনে আল্লাহ যা কিছু উল্লেখ করেছেন, যেমন মুখমন্ডল, হাত, নফস ইত্যাদি সবই তার বিশেষণ, কোনো ‘স্বরূপ’ বা প্রকৃতি নির্ণয় ব্যাতিরেখে। এ কথা বলা যাবে না যে, তার হাত অর্থ ক্ষমতা অথবা তার নিয়ামত। কারন এরুপ ব্যাখ্যা করার অর্থ আল্লাহর বিশেষণ বাতিল করা। এরুপ ব্যাখ্যা করা কাদারিয়া ও মু’তাযিলা সম্প্রদায়ের রীতি। বরং হাত তার বিশেষণ, কোনো স্বরূপ বা প্রকৃতি নির্ণয় ব্যাতিরেখে। তার ক্রোধ এবং তার সন্তুষ্টি তার দুটি বিশেষণ, আল্লাহর অন্যান্য বিশেষণের মতই, কোনো ‘কাইফ’ বা ‘কিভাবে’ প্রশ্ন করা ছারাই”
[আল-ফিকহুল আকবর; অনুবাদঃ ডঃ খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর; পৃঃ ২৫৩; আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স]
২.  ইমাম আবু হানিফা রাহিমাহুল্লাহ বলেছেনঃ “মহান আল্লাহ সৃষ্টির বিশেষণে বিশেষায়িত হন না। তার ক্রোধ ও সন্তুষ্টি তার বিশেষনসমূহের দুটি বিশেষণ, কোনো স্বরূপ নির্ণয় ছাড়া। এটিই আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা’আত-এর মত। মহান আল্লাহ ক্রোধান্বিত হন এবং সন্তুষ্ট হন। এ কথা বলা যাবে না যে, তার ক্রোধ অর্থ শাস্তি এবং তার সন্তুষ্টি অর্থ তার পুরস্কার। আল্লাহ নিজে নিজেকে যেরুপ বিশেষিত করেছেন আমরাও তাকে সেভাবেই বিশেষিত করি। তিনি একক, অমুখাপেক্ষী, তিনি কারো জন্ম দেন নি, তিনি জন্মপ্রাপ্ত নন, কেউ তার তুলনীয় নয়। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসংরক্ষক, ক্ষমতাবান, শ্রবণকারী, দর্শনকারী, জ্ঞানী, আল্লাহর হাত তাদের হাতের উপর, তার হাত তার সৃষ্টির হাতের মত নয়; তা অঙ্গ নয়; তিনি হস্ত সমূহের স্রষ্টা। তার মুখমণ্ডল তার সৃষ্টির মুখমণ্ডলের মত নয়; তিনি সকল মুখমণ্ডলের স্রষ্টা। তার নফস তার সৃষ্টির নফসের মত নয়, তিনি সকল নফসের স্রষ্টা। ‘কোন কিছুই তার সাথে তুলনীয় নয়, এবং তিনি সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা’”
[ইমাম আবু হানীফা, আল-ফিকহুল আবাসাত, পৃঃ ৫৭]
৩.  ইমাম শাফিয়ীর ছাত্র ইউনুস ইবন আব্দুল আ’লা বলেছেনঃ “আবু আব্দুল্লাহ শাফিয়ীকে মহান আল্লাহর বিশেষণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলো। তখন তিনি (ইমাম শাফিয়ী) বললেনঃ আল্লাহর নামসমুহ এবং বিশেষণসমূহ রয়েছে। কোরআনে সেগুলোর উল্লেখ রয়েছে এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উম্মাতকে জানিয়েছেন। যার কাছে তা প্রমানিত হয়েছে তার জন্য তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কারন কোরআনে তা অবতীর্ণ হয়েছে এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সহীহ সনদে বর্ণীত হয়েছে যে, তিনি এগুলি বলেছেন। যদি কেউ তার কাছে বিষয়গুলো প্রমানিত হওয়ার পরেও বিরোধিতা করে তবে সে ব্যক্তি কাফির। তবে যদি কেউ তা তার নিকট প্রমানিত হওয়ার পূর্বে বিরোধিতা করে তবে সে ব্যক্তি অজ্ঞতার কারনে ওজর-অব্যাহতির যোগ্য। কারন এ বিষয়ক জ্ঞান মানবীয় বুদ্ধি-বিবেক, যুক্তি, গবেষণা ও চিন্তাভাবনার মাধ্যমে অর্জন করা যায় না।… আমরা এসকল বিশেষণ প্রমান ও বিশ্বাস করি এবং এগুলি থেকে তুলনা বাতিল ও অস্বীকার করি। কারন মহান আল্লাহ নিজেই নিজের তুলনীয় হওয়ার বিষয়টি বাতিল করে বলেছেনঃ ‘কোনো কিছুই তার সাথে তুলনীয় নয়; তিনি সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা’”
[ইমাম যাহাবী, সিয়ারু আলামিন নুবালা, ১০/৭৯-৮০ ; ইমাম ইবনু কুদামা, যাম্মুত তাবীল, পৃঃ ২৩ ; ডঃ খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর, ফিকহুল আকবর এর বঙ্গানুবাদ ও ব্যাখ্যা, পৃঃ ২৬৯]
৪.   মহান আল্লাহর বিশেষণ বিষয়ে ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বলের মূলনীতি ও আকীদা ব্যাখ্যা করে তার ছাত্র আবু বকর খাল্লাল বলেনঃ “আহমাদ ইবন হাম্বলের মাযহাব এই যে, মহান আল্লাহর একটি ‘ওয়াজহ’ বা মুখমণ্ডল আছে। তার মুখমণ্ডল প্রতিচ্ছবি বা আকৃতি নয় এবং আঁকানো বস্তুর মতও নয়। বরং মুখমণ্ডল তার একটি মহান বিশেষণ।… তার(ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বলের) মতে মুখমণ্ডল অর্থ দেহ, ছবি বা আকৃতি নয়। যদি কেউ তা(মুখমণ্ডলকে দেহ বা আকৃতি) বলে তাহলে সে বিদআতি। তিনি বলেন মহান আল্লাহর দুটি হস্ত বিদ্যমান। এদুটি তার সত্ত্বার বিশেষণ। হস্তদ্বয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নয়, দেহের অংশ নয়, দেহ নয়, দেহ জাতীয় কিছু নয়, সীমা সংযোজন, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জাতীয় কিছুই নয়। এ বিষয়ে কিয়াস-যুক্তি অচল। এতে কনুই, বাহু ইত্যাদি কোনো কিছুর অস্তিত্ব কল্পনার সুযোগ নেই। কোরআন ও হাদীসে যতটুকু বলা হয়েছে তার অতিরিক্ত মানুষের ব্যাবহার থেকে কিছু সংযোজন করা যাবে না। মহান আল্লাহকে যারা দেহবিশিষ্ট বলে দাবি করেন তিনি(ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বল) তাদের কথা অস্বীকার ও প্রতীবাদ করেন। কারন নাম তো শরীয়াহ এবং ভাষার ব্যাবহার থেকে গ্রহন করতে হবে। ভাষার ব্যাবহারে দেহ বলতে গণ্ডি, সীমা, দৈর্ঘ, প্রস্থ, গভীরতা, অংশ, আকৃতি ও সংযোজন ইত্যাদির সমাহার বুঝানো হয়। মহান আল্লাহ এর সবকিছুর উর্ধে। শরীয়াতেও মহান আল্লাহকে এ বিশেষণে বিশেষিত করা হয় নি। কাজেই মহান আল্লাহর দেহ আছে বা তিনি দেহবিশিষ্ট এরুপ কথা বাতিল”
[ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বল, আল-আকীদাহ, আবু বকর খাল্লালের বর্ণনা, পৃঃ ১০২-১১১]
৫. আল্লাহ পাক সীমা-পরিধি থেকে মুক্ত। তিনি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও সার-সরঞ্জাম থেকে মুখাপেক্ষীহীন। অন্যান্য সৃষ্ট বস্তুর ন্যায় ষষ্ঠ দিক তাকে বেষ্টন করে রাখতে পারে না।
[আকীদাহ তাহাবীয়াহ, আকীদা নং-৩৮]
ইমামদের উপরক্ত বক্তব্য সমূহ থেকে স্পষ্ট যে, মহান আল্লাহর মুখমণ্ডল, চোখ, হাত, পা এগুলো সবই সিফাত বা গুন বা বিশেষণ, এগুলো আল্লাহর দেহ বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নয়, আল্লাহর দেহ বা শরীর নেই, কিন্তু অবশ্যই মুমীনগন মৃত্যুর পর আল্লাহকে দেখতে পাবেন।
ডঃ মনজুরে ইলাহী হাফিযাহুল্লাহ মহান আল্লাহর চেহারা, হাত, চোখ, পা  এগুলো উল্লেখ করে বলেছেনঃ “এগুলো আল্লাহর জাতী সিফাত, আমরা এভাবে বলব না-এগুলো আল্লাহর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, বলবো কি- আল্লাহর জাতী সিফাত”
ডঃ মনজুরে ইলাহীর কথাটি তার নিজের মুখে শুনতে ও দেখতে এখানে ক্লিক করুন
আলহামদুলিল্লাহ, ডঃ মনজুরে ইলাহীও আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের সঠিক আকীদার উপর বিদ্যমান রয়েছেন, কিন্তু দুঃখ জনক বিষয় এই যে, বর্তমানে অনেক সঠিক আকীদার অনুসারীরাও বিশ্বাস করেন যে, আল্লাহর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রয়েছে যা সম্পূর্ণ ভুল আকীদাহ, সালাফে সালেহীনগন এরুপ আকীদাহ পোষণ করতেন না।
আল্লাহ সর্বাধিক ভালো জানেন। আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে পরিচালিত করুক। আমীন।


No comments:

Post a Comment